বিদ্রোহ !! ওয়াইল্ড ভারসেস ম্যান। অধিকার, যেভাবে শান্তিতে বসবাস করা যায়। - Some Where in BD Tips Original Hover Effects with CSS3

জনপ্রিয়

close
close

Some Where in BD Tips

বাংলা ব্লগ সাইটে আপনাকে স্বাগতম

Recent Posts

Recent News

বিদ্রোহ !! ওয়াইল্ড ভারসেস ম্যান। অধিকার, যেভাবে শান্তিতে বসবাস করা যায়।

সে এক কঠিন দুঃসময়ের কথা! গৃহপালিত পশু-পাখিরা সব বিদ্রোহ করে ওঠল মানব জাতির বিরুদ্ধে!এমন একটি প্রাণিও ছিলনা যারা এ বিদ্রোহে শামিল হলনা! সেইসাথে মিত্র হিসেবে বন্য পশুরাও যোগ দিল তাদের সাথে! ফলে ভয়ানক রকম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে গেল প্রাণি জগত!এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হল যে, মানুষেরা না পারছে সমস্ত পশু-পাখিদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে; আর না পারছে টিকে থাকতে! কারণ, যদি সমস্ত বিদ্রোহীদের শেষ করে দেয়া হয়, তাহলে এমনিতেই কদিন বাদে ধ্বংস হয়ে যাবে মানবের অস্তিত্ব! আর যদি এর কিছু একটা বিহিতও না করা যায়, তবুও বেশিদিন লাগবেনা- মারা পড়বে একটা একটা করে প্রতিটি মানুষ! কেননা সম্মিলিত পশু-পাখিদের দল কেবল অবাধ্যই হয়ে ওঠলনা, সেইসাথে আক্রমণও চালাতে শুরু করে দিল মানুষের ওপর! যাদেরকে সামনে থেকে নের্তৃত্ব দিচ্ছিল গৃহপালিত পশুদের পক্ষ থেকে কুকুর বাহাদুর আর বন্য পশুদের পক্ষে নির্দয় হায়েনা। সেইসাথে পাখিদের নের্তৃত্বে ছিল যথাক্রমে শক্তিশালী মোরগ রাজ এবং চৌকস শকুন। আর সরীসৃপদের মধ্যে ছিল রাজ গোখরা এবং হিংস্র কুমির। তবে একমাত্র জলচর প্রাণি মাছ এ সময় কোন দলেরই পক্ষ অবলম্বন করলনা। তারা রয়ে গেল নিরপেক্ষ। কারণ, মানুষ যেমন তাদের জন্য মৃত্যুর কারণ, তেমনি বাকিরাও তাদের জন্য অনিরাপদ। কাজেই তারা তাদের মত করে বাঁচতে চাইল, আগে যেমন ছিল সেরকম করে! যেন স্থলভুমি প্রাণিশূণ্য হয়ে গেলেও তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। আর থাকবেই বা কেন? দুয়ে মিলে কি অত্যাচারটাইনা করে তাদের ওপর! যখন তখন ধরে নিয়ে যায় খাওয়ার জন্য! এমন কি কোন মা মাছ বা বাচ্চাদেরও নিস্তার হয় না তাদের হাত থেকে! সুতরাং যা হচ্ছে ভালই হচ্ছে, পরস্পর ঝগড়া করে সাফ হয়ে যাক সব। এতে আর যাই হোক, নিরাপদে বাঁচা যাবে। সবসময় মরণ ভয় তাড়া করে বেড়াবেনা।

মত্স রাজের এরূপ বক্তব্য শোনার পর যুদ্ধরত উভয় দলই আশাহত হল! তারা দুদলই চেয়েছিল যেন মাছেরা তাদের পক্ষ নেয়। কিন্তু সে আর হলনা! এদিকে অনেক ভেবে চিন্তে এবং মত্স রাজের অভিযোগ পর্যালোচনা করে মানব জাতির নেতৃত্বে থাকা দলপতি ড. কবির সুরত পশু-পাখিদের হঠাত্ বিদ্রোহের কারণ আবিষ্কার করতে সক্ষম হল। যার মূলে রয়েছে বেচারাদের উপর মনুষ্য সমাজের নির্মম আচরণ আর পৈশাচিক অত্যাচার। কাজেই তিনি প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রধানদের নিয়ে এক জরুরী বৈঠক ডাকলেন হিমালয় চুড়ায়, যেহেতু নিন্মভূমি তখন বৈঠকের জন্য নিরাপদ ছিলনা। আর সে বৈঠকে সকলেই সম্মতি প্রকাশ করল যে তাদের রূঢ় আর নিষ্ঠুর আচরণের ফলেই আজ পশু-পাখিরা এ মরণ বিদ্রোহে অবতীর্ণ হয়েছে। যা কিনা তাদের নির্বুদ্ধিতা আর স্বেচ্ছাচারিতারই দন্ড! কারণ তারা কখনোই পশু-পাখিদের কোন রকম অধিকার সম্পর্কে সচেতন ছিলনা!

সুতরাং এখন বেঁচে থাকার একটাই উপায়- তা হল ওদের সাথে সমোঝতায় পৌঁছানো। কিন্তু যেরকম বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে তারা, এ অবস্থায় সমোঝতাতো দূরে থাক, মানুষের সাথে আলোচনায় বসতেও রাজি হবেনা ওরা! তবুও আশা ছাড়লেননা কবির সুরত, প্রস্তাব করলেন যেভাবেই হোক বানর রাজকে রাজি করাতেই হবে সমঝোতা বৈঠকের জন্য! এরপর তার হস্তক্ষেপেই সব ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করলেন তিনি।

যাইহোক, সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধানদের সিদ্ধান্তের ফলে অনেক বলে কয়ে রাজি করানো গেল বানর রাজকে। তিনি পরামর্শ দিলেন, এজন্য প্রথমে একটি পশু-পাখি অধিকার সম্বলিত অঙ্গিকার নামা তৈরি করা হোক, যাতে উল্লেখ থাকবে-
১। নির্বিচারে কোন পশু-পাখিকে হত্যা করা যাবেনা।
২। গৃহপালিত পশু-পাখিদের পূর্ণ আদর যত্নে লালন পালন করতে হবে।
৩। বন্য পশু-পাখিদের আটকে রেখে বা অন্য কোন উপায়ে অযথা হয়রানি করা যাবেনা।
৪। কুকুর বিড়াল দেখলেই লাঠি নিয়ে তাড়া করা যাবেনা, তাদের থাকা খাওয়ার নিরাপদ ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। এক কথায় সকল পশু-পাখিদের জন্য নিরাপদ ভুখন্ড তৈরি করতে হবে, যাতে তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারে।

বানর রাজের পশু-পাখি অধিকার নীতিমালা শোনার পর, দলপতি কবির সুরত তাকে বললেন- আমাদের কেবল একটি দাবি আছি, আর তা হল, তোমরা শুধু আমাদের অনুগত থাকবে। তাহলে কথা দিচ্ছি তোমাদের সমস্ত দাবি দাওয়া মেনে নেয়া হবে। যাতে আমরা সবাই মিলে যে যার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে একসাথে মিলেমিশে বাস করতে পারি এবং একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি।

ড. কবির সুরতের কথায় সায় দিয়ে বানর রাজ উপরিউক্ত অঙ্গিকার নামা নিয়ে ছুটে গেল পশু-পাখিদের নের্তৃত্ব দানকারী সভাসদদের উদ্দেশ্যে। সেখানে সমস্ত পশু-পাখিদেরকে সব কিছু খুলে বলল বানর রাজ। কিন্তু নের্তৃত্বে থাকা সকল পশু-পাখিই এতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করল। তারা জানাল, মানুষের অনুগত গোলাম হয়ে জীবন যাপন করা খুবই দুঃসহ। কেননা তারা যে কোন সময় তাদের কথার খেলাপ করতে পারে। সুতরাং তাদের এ প্রস্তাব মেনে নেয়া সমীচিন হবেনা! এসময় সবার মাঝখান থেকে একটি বৃদ্ধ ছাগল বের হয়ে প্রথমে দুই হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে নিল যদি কথার মাঝে কোন ভুল ত্রুটি করে ফেলে তার জন্য। এরপর সে বলা শুরু করল, আমার মনে হয় তাদের প্রস্তাব মেনে নেয়াই হবে আমাদের জন্য কল্যাণকর। কেননা সৃষ্টিগতভাবে তারাই আমাদের উপর কর্তৃত্ব ফলানোর অধিকারি। আর এর মাধ্যমেই রক্ষা পেতে পারে জীব বৈচিত্রের যথাযথ অস্তিত্ব। নতুবা এ ধ্বংসাত্নক যুদ্ধে আমরা সকলেই বিলীন হয়ে যাব। তাছাড়া তারা যেহেতু তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে সেহেতু তাদের কথা মেনে নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

ছাগলের মুখ থেকে এত সুন্দর জ্ঞানগর্ভ কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বলদ আর গাধাও তাকে সমর্থন জানাল। এরপর প্রথমে কুকুর এবং পরে একে একে সবাই সম্মতি জ্ঞাপন করল। সেইসাথে সবাই স্বীকার করে নিল যে, প্রাণি জগত একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।একজন ছাড়া আরেকজনের অস্তিত্ব এখানে একেবারেই বিপন্ন।কাজেই এখানে সবাইকে মিলে মিশেই বাস করতে হবে।
আর এভাবেই পশু-পাখি এবং মনুষ্য সমাজের মধ্যে পারস্পরিক অধিকার সচেতনতা নিয়ে সন্ধি স্থাপন হল। এখবর শুনার পর মত্স রাজ খুব চিন্তায় পড়ে গেল, যে এবার বুঝি আর তাদের রক্ষা নেই।হয়তোবা একটা একটা করে সমস্ত মাছদের ধরে নিয়ে খেয়ে ফেলবে তারা।কিন্তু মত্স রাজের সে চিন্তা দূর হল যখন তারাও ওদের অঙ্গিকার নামায় সাক্ষর করল।আর এভাবেই প্রাণি জগতে পুন:শান্তি প্রতিষ্ঠা হল এবং ফিরে এল ভারসাম্য।
আরও মজার গল্প দেকুন  .,,,

আমাদের সাইটের পোস্ট ইমেজ ইফেক্টসিএসএস3 ট্রানজিশন এবং অ্যানিমেশন সিস্টেম