গাছে একটা কাঠবিড়ালী বসেছিল। সেখান থেকে বিড়ালীটা বললো “কাঠ” শব্দটা আমাকে মানায় না। কাঠ বললো বেশ, তুমি “বিড়ালী” হও। দীর্ঘ “ঈ”র মন খারাপ। সে বললো,”বিড়ালী আপু তুমিতো আমাকে ছাড়া বেশ ভাল থাকো। আমাকেও মুক্তি দাও”। সবুজ ঘাসের উপর বসে থাকলো বিড়াল। অনেকদিন ধরে সে ভাল খেতে পায়না। গাছে গাছে পেয়ারা খেয়ে মুখের রুচিটা চলে গেছে।
“বাদাম। লাগবে বাদাম। গরম গরম বাদাম”, একটা বাদামের ঠেলাগাড়ি এসে দাঁড়ায়। উনানে আগুন জ্বলছে। মা বলেছে, “খোকা, যা তো চিনে বাদাম কিনে আন”। ২ টাকা নিয়ে এসে খোকা বাদাম কিনতে এলো। কিন্তু চুলায় তখন মচ মচ শব্দ করে চালভাজা ফুটছে। খোকা বললো, “১ টাকার বাদাম আর ১ টাকার চালভাজা দিন”। বড় বড় গোঁফে তা দিয়ে বাদামওয়ালা বললো, “যথা আজ্ঞা, একটু বসতে হবে”।
খোকা একটা কাঠের টুকরো পড়ে থাকতে দেখলো। সেখানে বসতেই একটা সাদা বিড়াল ম্যাও ম্যাও করে তার চারদিকে ঘুরতে থাকলো। খোকা বললো, কী বিড়াল তুমি চালভাজা খাবে, মিঁয়াও (মানে হ্যা) -নাকি বাদাম -নিয়াও (মানে না) বাদামওয়ালা ঠোঙা ভর্তি চালভাজা দিলে খোকা বিড়ালকে অল্পকয়টা চালভাজা দিল। গরম চালে বিড়ালের মুখ পুড়ে যায় আর কি! বিড়াল সেই ভাজা খেতে পারে না। সে ইলিশ ভাজা পছন্দ করে। কিন্তু ইলিশ কোথায় পাবে, পদ্মা নদী ছাড়া?
কয়েকফুট দুরে বালু তে একটা টিয়া বসে ছিল। সে বললো, “তুমি এখানে ইলিশ পাবে না। কিন্তু তোমায় দুধ দিতে পারি”। বলতেই “বালি” থেকে “বা” আর “টিয়া” থেকে “টি” মিলে গেল। হয়ে গেল একটা “বাটি”। বিড়ালটা বাটির ভিতর মুখ দিয়ে চুক চুক করে দুধ খেতে থাকলো। তারপর গর গর করতেই বাটিটা ফের বালু হয়ে গেল। আর টিয়াটা সবুজ ডানা মেলে ডালে বসলো।
খোকা এসব দেখে চোখ ছানাবড়া করে ফেললো। তারপর বললো, “ওরে বাবা”! খোকার মুখ থেকে “বাবা” শব্দটা মাটিতে “বা”,”বা” দুটো খন্ড হয়ে পড়ে রইল। পড়লো কোথায়? সেই নরম বালুতে। “নরম” শব্দটা অবশ্য বালুর খুব অপছন্দ। “ম”টা বাদ দিলে “নর” হয়। নর মানে ছেলে মানুষ। মানুষ তার তার ভাল লাগে! কিন্তু কী কান্ড সেই “নর” টা যুক্ত হলো “বা” তে। আর অমনি হয়ে গেল “বানর”।
টিয়া দেখলো সেই বানরটা আনন্দে লাফাচ্ছে। আর খোকাও খুব মজা পেয়েছে। বানরটা ডিগবাজী খেয়ে বললো, “বিড়াল, আজ দুর দেশে ইলিশ ভাজার গন্ধ পাচ্ছি। যাই তোমার জন্য একটুকরো নিয়ে আসি”। তখন সবাই মিলে অপেক্ষা করতে লাগলো বানরটার জন্য।